বিট জেনারেশনের মহিলা কবি জোয়ান কায়গা-র কবিতা ( ১৯৩৪ - ২০১৭ )
অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী
তামালপায়িস পাহাড়ের স্ফটিক
তামালপায়িসে আছে এক বড়ো স্ফটিক ।
পরিচিত একজন গল্পটা বলেছিলেন।
একজন মিয়োক তার দাদুর ওষুধের ঝুলি
বার্কলের ক্রোয়েবের সংগ্রহশালাকে দিচ্ছিলেন ।
তিনি বললেন এই লোকটা বছরের এক নির্দিষ্ট সময়ে
আমায় তামালপায়িস পাহাড়ে নিয়ে গিয়েছিল ।
আমার বিশ্বাস তা ছিল দক্ষিনায়ণের কাছাকাছি সময়ে,
কেননা তখন প্রবাহের জল নীচের দিকে থাকে ।
ওরা থামল আর পাহাড়ে ওঠার পথে কোনো একটা একটা গুল্ম সংগ্রহ করল ।
বোলিনাসের তীরে শান্ত এলাকায় যাবার পথে একটা বেশ বড়ো পাথর আছে ।
চলে যাও
পাথরটার কাছে । ওষুধের ঝুলি থেকে স্ফটিক বের করো
যার সঙ্গে তামালপায়িসের স্ফটিকের মিল আছে । আর
যদি তোমার হৃদয় সত্য না হয়
যদি তোমার হৃদয় সত্য না হয়
যখন তুমি শান্ত জায়গায় পাথরটায় টোকা দেবে
তার একটা টুকরো উড়ে যাবে
আর তোমার হৃদয়ে টোকা দেবে
আর তোমাকে মেরে ফেলবে ।
আর সেটাই ছিল প্রথম গল্প যা আমি বোলিনাস সম্পর্কে শুনেছিলুম।
তা সে বহুকাল হয়ে গেল
‘বিপ্লবের সময়ে লিখে রাখা’
এই গল্পের স্বরকম্পনের সময়ে তুমি আরও স্বরকম্পন পাবে।
আমি বলতে চাইছি, এক স্বরকম্প, গানের ক্যানটাস,
আমি বলতে চাইছি, আমাদের গড়ে তোলো,
আমি বলতে চাইছি কাগজ,
আমি বলতে চাইছি সেই রাজত্বের কথা যা আসতে চলেছে,
এখানে আবিষ্কারের পথে। তা ওম শ্রীমৈত্রেয়,
তুমি আমার স্বরকম্প ডিঙিও না,
কিন্তু ওদের সঙ্গে সর্বনাম হারিয়ে ফ্যালো,
এটা হলো তোমার, এটা হলো তুমি
এটা হলো স্বয়ং, এটা হলো আমি ।
যন্ত্ররা ধাতব, আমরা তাদের সামলাতে পারি,
তারা আমাদের সেবা করে, আমরা তাদের সামলাই।
এটা আমাকে প্রদত্ত, আর এটা তোমাকে ।
তুমি আমাকে তুমি বলো, আর আমি তোমাকে তুমি বলি ।
কিছু যন্ত্র বেশ সূক্ষ্ম, তারা নিখূঁত,
তারা পিষে ফেলার বড়ো ধাতব জিনিস নয় ।
যুবতীটি যথেষ্ট কবিতা তৈরি করেছে নিজের সঙ্গী হিসাবে।
আমার অনুভূতি । তুমি আমার অনুভূতিদের আটক করেছ ।
আমার দীর্ঘ ছায়ার দল, দীর্ঘ ছায়ারা, দীর্ঘ ছায়ারা।
আমার মিষ্টি মৃদু স্বরের ওঠানামা,
আমার মিষ্টি মৃদু স্বরের ওঠানামা আমার বাহু ।
কেবল কিসের জন্য : যে গান যুবতীটি গেয়েছিল যে গান যুবতীটি গেয়েছিল
সেপ্টেম্বর
ঘাসগুলো ফিকে বাদামি
আর সমুদ্র চলে আসে
দীর্ঘ কাঁপতে থাকা পংক্তি
কাল রাতের পর পায়ের তলায়
যা এখন ভোরবেলায় ঢুলছে
এখানে সেখানে ঘোড়ারা চরে বেড়াচ্ছে
অন্য কারোর মাঠে
অদ্ভুত, তা আমার আকাঙ্খা ছিল না
যা বিদায় জানালো গির্জায় বলার জন্য যাতে আমাকে মুক্তি দেয়া হয়
কিন্তু যেভাবে স্মৃতির ফিরে আসার কথা
অবহেলায় আর বিদেশি খেলা
যখন চরিত্ররা ছিল প্রতিশ্রুতি
তারপর স্বীকরতি । পরিবর্তনের জগতসংসার
বাস্তব কিন্তু বাস্তব নয় বরং বিশ্বাসের ।
এই শিক্ষা যথেষ্ট ? আমি বলতে চাই
নীতিমূলক প্রবাদ তোমাকে ভেতরে নেবার জন্য আর বাইরে নিয়ে যাবার জন্য
ভালোবাসার রহস্যময় বাঁধন থেকে ?
যাহোক আমি নিজে আমি নই
আর টিকে থাকার কোন ক্ষমতার কথা আমি বলি
আমাদের জন্য যা বাড়ির তৈরি নয় ।
এ হলো অন্তরজগতের বিলাস, সোনালি প্রতিমার
যা শ্বাস যেমনভাবে পাহাড়েরা নেয়
আর যা ত্বক নক্ষত্রেরা শ্যামল করে দিয়েছে।
“যখন আমি উদ্বেগে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতুম, সবায়ের”
যখন আমি উদ্বেগে দৃষ্তি নিবদ্ধ করতুম, সবাই
আমার চেয়ে এগিয়ে থাকত, আমি একেবারে তলানিতে
টোটেম থামের,
ছড়ানো এক উবু জানোয়ার ।
কেমন হয় একটা দ্রুত মালিশ হলে এখন, যুবক আমাকে বলল।
আমি মনে করি না তা উচিত হবে, জবাবে বললুম।
ওহ, বলল যুবক, একটু থেমে, আমার অপেক্ষা করা উচিত ছিল
তোমার জিজ্ঞাসা করার আমাকে ।
ঢেউগুলো কাছে আরও কাছে এসে পড়ল ।
যখন আমি সন্দেহের ফাঁদে পড়ি আমি তখন এখানে থাকি না ।
এই জগতে যা ঘরবাড়িতে আবদ্ধ করে ফেলেছে নিজেকে
আর যোগাযোগের জাল, আমি বাইরে উড়ে যায়
তলপেটের তলা থেকে। জীবনের ঝকমকে মুকুট
ঘুরন্ত আলোর, মাথার ওপরে পাক খায়। বিশুদ্ধ
বিস্ময়ে, তপ্ত
বিস্ময়ে । পথগুলো সোনালি হয়ে ওঠে । সমস্তকিছু
মাপে বড়ো হতে থাকে, রঙগুলো উজ্বল হয়, আমরা কিংবদন্তিতে ।
আমরা সহজ বোঝাপড়ায় ।
বেশি কথা বলি না, আমাদের মধ্যে চিন্তা যাতায়াত করে ।
এটা স্মৃতি । আর আমি খুঁজি
ভেসে চলার মিষ্টি দিনগুলো । কুয়াশা সমুদ্রে চলে গেছে, বাতাস ।
ও জংলিঝোপ ছাঁটাই করছে
ও জংলিঝোপ ছাঁটাই করছে
অসুস্হ দুঃখের একাকীত্বের
বাতাসের আলগা টুকরোয় ও ক্লিপ ক্লিপ ক্লিপ চালায়
সবুজ ফুলের ডালগুলো পড়া যায় --- ‘এরা চলে যাচ্ছে
আয়ত্বের বাইরে’ মজাদার আর আদরযোগ্য কি এক তাড়না
আমরা মনে করি অজস্র
আত্মপরিচয় যখন তুমি গান গাও কতো সুন্দরভাবে ভেসে যাওয়া
মেঘগুলো -- তুমি এই জগতে একা নও
নও একলা এক সমান্তরাল পপতিবিম্বের জগত
এক জানালায় আগুন জ্বলতে থাকে
ফ্রেমে মণ্ডলম, লাল আলোকরশ্মির শিখা
বৃষ্টিতে রাখা বাগান-চেয়ারের পেছনে বসে থাকে
বৃষ্টিতে লাল আলখাল্লা-পরা বৌদ্ধলামারা শহরের ঘিঞ্জি এলাকায় রামধনু জাগে
সরল দেশ অভ্যাস করে বজ্রপাতের
বিদ্যুতের, শিলা আর বৃষ্টি আটটা ডগলাস কনীনিকা
রিবনের লক্ষ্যের পরত
অতএব ‘আত্ম’-কে অবিরাম নির্মাণ বেশ মজার
ঝঞ্ঝাটা ও ছাঁটাই করছে লকেটগাছ, অলিভ
যা সকালের স্যাঁতসেতে হাওয়ায় মনে হয় বাস্তব
No comments:
Post a Comment