Sunday, June 2, 2019

নাজিক আল-মালাইকা-র ( ১৯২৩ - ২০০৭ ) কবিতা । অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী

Nazik Al-Malaika, Arabic poet from Iraq
নাজিক আল-মালাইকা-র ( ১৯২৩ - ২০০৭ ) কবিতা । অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী

রাতের নৈঃশব্দ বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে
পায়রাদের ছাড়া তাতে ভাঙন ধরেনি, অনেক দূর থেকে,
বকবকম করে চলেছে, বিভ্রান্ত, আর কুকুরেরা ডাকছে প্রাচীন নক্ষত্রদের
যেমন ক্ষুধার্ত ঘড়িগুলো আমাদের অস্তিত্ব গিলে খায় ।
ওই দিকে, লাইনের ওপর দিয়ে দ্রুত
একটা রেলগাড়ি
চলে গেল । আমি অযথা সারাটা রাত অপেক্ষা করলুম
তার  আর দিনের জন্য...রেলগাড়িটা
তার শব্দ আর শোনা যাচ্ছে না, দূরে, স্‌ইর,
আমার হৃদয়ে এক দুর্বল প্রতিধ্বনি
কেবল টিকে আছে, দূরের পাহাড়ের পেছনে ।
স্বপ্নালু নক্ষত্রদের দিকে তাকিয়ে, শুরু করি
রেলগাড়ির কামরার কল্পনা, কম আলো
ঘুমহীন যাত্রিদের সারিগুলোর ওপরে,
রাত্রির ওজনের কল্পনায় মশগুল
ক্লান্ত চোখের পাতায়, যে চোখের দৃষ্টি আবছা,
অন্য সবায়ের মুখ দেখে বিষণ্ণ, ফ্যাকাশে আর অনমনীয়,
অন্ধকারকে পাহারা দিয়ে ক্লান্ত ।
তিক্ত বিরক্তির ছবি ভেসে ওঠে
প্রতিটি রেলস্টেশনের সাথে-সাথে যা আত্মায় আরও ঘষে যেতে থাকে
তাদের মালপত্র অপেক্ষা করছে, যা করা জরুরি,
মালপত্র, ধুলোর পরতের তলায় অপেক্ষা করছে ।
ওরা একটু ঘুমিয়ে নেয়, কিন্তু প্রতিটি ঝাঁকুনিতে জেগে ওঠে
পুরোনো রেলগাড়ির, হাই তোলে, তন্দ্রাচ্চন্ন, ভোরের দিকে তাকায়,
ওরা আবার অন্য লোকেদের মুখের দিকে তাকায়,
রেলগাড়ির জড়ো-করা অচেনাদের মুখ ।
অনেকে প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছে তখন কানে আসে
এক তোতলা কর্কশ কন্ঠস্বর, “দ্যাখো,
হাতঘড়ির এই কাঁটাগুলো, যেন পথ হারিয়েছে ।
কতক্ষণ পৌঁছোতে লাগবে ? বলতে পারো ?”
ওর হাতঘড়ি উদাসীনভাবে তিনটে বাজায়
আর তখনই ট্রেনের সিটি কথায় ব্যাঘাত ঘটায়
ট্রেনের কন্ডাক্টরের আলো, ঝুলছের
জানালায় স্টেশনের আলোর সঙ্গে মিশ খায়,
আর কিছুক্ষণেই ক্লান্ত রেলগাড়ি ধীরগতি হতে থাকে ।
...ওখানে আকটা ছেলে, গুঁড়ি মেরে রয়েছে
ক্লান্ত কিন্তু ঘুমোতে চাইছে না, দীর্ঘশ্বাস ফ্যালে
আর নক্ষত্রদের পাআরা দেয় ।
এক উদ্বিগ্ন নৈঃশব্দ আকার পায়, ওর চোখে,
শীতল উদাসীনতায়, অসুস্হ স্বপ্ন আলো ফ্যালে
ওর মুখে, অদ্ভুত, লালচে আলোয় ।
ওর ঠোঁট দুটো, খোলা, দেখা বোঝা যায়
স্বপ্ন যা ছড়িয়ে পড়েছে, এই ফাঁকা রাতের তলায়,
গোপন সঙ্গীত ডানা ঝাপটাচ্ছে,
ওর চোখ প্রায়-বন্ধ, যেন ভয়ে
আলোর রশ্মি পালটে দেবে যাকিছু ও দেখছে তাকে,
কিংবা হয়তো এক্ষুনি কোনো জঘন্য বস্তু আবির্ভূত হবে,
এই ছেলেটা, এতো বিক্ষুব্ধ আর আন্তরিক,
অন্যদের মাঝে অকারণে খুঁজে চলেছে
পুরোনো রহস্যের চেয়ে বেশি কিছু,
হাজার পর্বে ভাগ করা সেই জীর্ণ কাহিনি ।
নায়কদের পরবর্তী কাহিনি সম্পর্কে জগতসংসার পরিশ্রান্ত,
আর আগ্রহহীনভাবে তাকে অনুসরণ করে ।
এই ছেলেটা…
টকিট চেকারের পায়ের আওয়াজ পাশ দিয়ে চলে যায়
তারপর ওর ঘুমহীন মুখ
কাচের ভেতর দিয়ে তাকায় !
ওর লন্ঠন জায়গাটাকে আলোকিত করে
ওদের মুখ দেখতে পায়, ক্লান্ত চোখ-মুখ
যাত্রীরা যারা সারারাত ঘূমহীন কাটিয়েছে,
ও দেখতে পায় তন্দ্রালু, অপেক্ষারত প্রাণীদের,
ভোরের নাম ধরে ডাকছে চোখের পাতা ।
আর তারপর পায়ের ভারি আওয়াজ মিলিয়ে যায়
রেলগাড়ির অন্ধকারে ।
এক পতিতজমির পাশ দিয়ে ট্রেন চলে যায়
আর আমি একা, কালোয় চোবানো,
রাতকে অনুরোধ করি আমার কবিকে ফিরিয়ে আনতে ।
ট্রেনটা ওকে এতোক্ষণ অপেক্ষ করিয়েছে কেন ?
ও কি পাশ দিয়ে চলে গেছে, অবাক হই,
পেটমোটা টিকিটচেকারের
নিজের যাতায়াত বজায় রেখেছে, ওকে দেখতে পায়নি,
ফিকে আলোয় যাত্রীদের নিরীক্ষণ করার সময়ে ?
আর এখানে আমি অপেক্ষায়, আর এখানেই আমি থাকব
রেলগাড়ির আসার অপেক্ষায় ।

এক গুরুত্বহীন মহিলার জন্য রচিত এলেজি
উনি মারা গেলেন, কিন্তু কোনো ঠোঁট কাঁপেনি, কোনো গাল ফ্যাকাশে হয়নি
কোনো দরোজা শোনেনি ওনার মৃত্যুর কাইনি
কোনো জানালার কপাট খুলে ক্ষুদে চোখ চাউনি মেলেনি
শবশকট এলো আর চলে গেলো দৃষ্টির বাইরে ।
কেবল পথের একটা ভিখারি, আর্ত
ক্ষুধায়, ওনার জীবনের প্রতিধ্বনি শুনতে পেলো--
সমাধিদের নিরাপদ বিস্মৃতি
চাঁদের সবিষাদ-চিন্তা ।
রাত নির্দ্বিধায় সকালকে জায়গা ছেড়ে দিলো,
আর আলো নিজের সঙ্গে নিয়ে এলো আওয়াজ -- বাচ্চারা ঢিল ছুঁড়ছে,
একটা ক্ষুধার্ত, মিঁউমিঁউ বিড়াল, শুধু চামড়া আর হাড়গিলে,
আর ফিরিঅলারা লড়ছে, তিক্ত মারামারি,
কিছু লোক উপোস করে আছে, অন্যেরা আরও বেশি চাইছে,
কুলকুচি করছে নোংরা জল, আর এক মৃদুমন্দ বাতাস
খেলছে, একা, দরোজায়
ওনাকে প্রায় ভুলতে বসেছে ।
সূর্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ
বিপ্লবীদের জন্য উপহার ।
মেয়েটি সূর্যের সামনে দাঁড়ালো, চিৎকার করে :
“সূর্য ! তুমি আমার বিপ্লবী হৃদয়ের মতো
যার জীবনকে  ভাসিয়ে দিয়েছে যৌবন
আর যার চির-নবীকরণকরা আলো
নক্ষত্রদের দিয়েছে পান করার জন্য ।
সাবধান ! তোমাকে প্রবঞ্চনা করতে দিও না
কোনো বিভ্রান্ত দুঃখ কিংবা আমার চোখের জল ।
কেননা দুঃখ হল আমার বিপ্লব আর আমার প্রতিরোধের আঙ্গিক
রাতের তলায় -- আমার সাক্ষ্যের দৈবতা !”

“সাবধান ! প্রবঞ্চনা করতে দিও না আমার চেহারার দুঃখ,
আমার ফ্যাকাশে রঙ, কিংবা আমার আবেগর রূপোকে ।
আমার হতবুদ্ধি আর আমার কবির দুঃখের পংক্তির ধারাপ্রবাহ
আমার ভ্রূযুগলে কাঁপতে থাকা উচিত,
কেবল অনুভব আমার আত্মায় যন্ত্রণাকে অনুপ্রাণিত করে
আর জীবনের ভয়াবহ ক্ষমতায় আনে চোখের জল ।
কেবল ভবিষ্যবাণী উড়তে পারে না আর তাই তাকে প্রতিরোধ করে
দুঃখ, বেদনাদায়ক জীবনের মুখোমুখি ।”

“আমার দুই ঠোঁট--তাদের যন্ত্রণায় চেপে-ধরা
আমার দুই চোখ, শিশিরে তৃষ্ণার্ত ।
সন্ধ্যা আমার ভ্রূযুগলে ছায়া ফেলে গেছে,
আর সকাল আরেকবার রুদ্ধ করেছে আমার আশা ।
তাই আমি প্রকৃতিকে উজাড় করে দিতে এসেছি আমার বিভ্রান্তি
সুগন্ধময় গোলাপে, দুপুরের ছায়ায় ।
কিন্তু তুমি আমার গভীর দুঃখ আর চোখের জল নিয়ে ঠাট্টা করলে
আর হাসাহাসি করলে আমার তিক্ততা ও যন্ত্রণা নিয়ে ।”

“এমনকি তুমিও, সূর্য ? কি দৌর্মনস্য !
তুমি আমার স্বপ্নের অভিপ্রায়ের লক্ষ্য ।
তুমিই সেইজন যার উদ্দেশে আমার যৌবন গান গেয়েছিল,
তোমার হাসিমুখ আলোর বন্যায় মন্ত্রোচ্চারণ করেছিল ।
তুমিই সেইজন যাকে আমি পবিত্র মনে করে পূজা করেছি
আদর্শ হিসাবে যখন আমি যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চেয়েছি ।
কি মোহমুক্তি ! আর তুমি আমার জন্য নও
আমার দৌর্মনস্য ও বিষণ্ণতার ছায়ার চেয়ে বেশি কিছু ।”

“তোমার যে আদর্শ-প্রতিমা আমি গড়েছি তা ভেঙে চুরমার করব
আমার ভালোবাসা থেকে প্রতিটি বিকীর্ণ আলোর জন্য
আর তোমার দীপ্তি থেকে আমার চোখ সুরক্ষিত রাখব ।
তুমি প্রতারণাপূর্ণ উদ্ভাসের প্রেত ছাড়া আর কিছুই নও।
আমি আমার নিজের হৃদয়ের স্বপ্ন থেকে গড়ে তুলব এক স্বর্গোদ্যান ;
উদ্ভাসিত দীপ্তি না হলেও আমার জীবন কেটে যাবে ।
আমাদের, আদর্শবাদীদের, আমাদের তেজোময়তায়
আছে দৈবতার এবং হারিয়ে-যাওয়া অমরত্বের রহস্য।”
“আমার ঝোপঝাড়ের ওপরে তোমার আলোকরশ্মি ফেলো না !
যদি তুমি উদয় হও, তা আমার কবি হৃদয় ছাড়া অন্য কোনও কারণে ।
তোমার আলো আর আমার আবেগকে প্ররোচিত করে না,
কারণ আমাদের মতন মানুষদের আছে রাতের নক্ষত্র যা মননকে অনুপ্রাণিত করে ।
তারা বন্ধু যারা অন্ধকারেও জেগে থাকে ।
তারা আমার আত্মাকে বোঝে, আমার বিস্ফোরিত আবেগকে,
আর তারা আমার চোখের পাতার ওপরে দীপ্তিময় রেশ তৈরি করে
রহস্যময় সন্ধ্যায় রূপালি আলোর ।”

“জীবনের সঙ্গীত আর কবিতা হল রাত্রী
যেখানে পায়চারি করেন সৌন্দর্যের প্রেরণাদায়িকা দেবী।
আত্মা, আর কারারুদ্ধ নয়, তার মাঝে ডানা ঝাপটায়
আর নক্ষত্রের ওপরে উঠে যায় তেজোময়তা ।
প্রায়ই আমি তার ছায়ার আর আলোর তলায় হেঁটেছি
অন্যায্য অস্তিত্বের দুঃখ ভুলে গিয়ে,
আমার কন্ঠে দৈব অনুনাদের গান
আমার মুখের ভেতরে নক্ষত্রদের যাত্রীদলের আবৃত্তি।”

“প্রায়ই আমি দেখতে গেছি সব কয়টি অপসরণরত আলোদের
আর রাতের অন্ধকারে বেঁধেছি আমার সঙ্গীত,
কিংবা দেখতে গেছি অন্ধকারকে বিদায় জানাচ্ছে চাঁদ
আর ঘুরে বেড়িয়েছি আকর্ষক কল্পনার উপত্যকায় ।
নৈঃশব্দ আমার আত্মাকে শি্রিত করে তোলে
সন্ধ্যার শান্তি আর অন্ধকারের আড়ালে,
আর আলো নাচতে থাকে আমার চোখের পাতায়, ডাক পাড়ে
আসাময় হৃদয়ের স্বপ্নগুলোর গভীরতায় ।”

“সূর্য ! তোমার কথা বলতে হলে...কি ?
আমার আবেগ আর আমার মন তোমার মধ্যে কি পেতে পারে ?
অবাক হয়ো না যদি আমি অন্ধকারের প্রেমে পড়ি,
দাহের দেবীরা তোমরা গলে যাও আর তরল হয়ে যাও
প্রতিটি স্বপ্ন দেখা দিলে তাকে ছিঁড়ে ফ্যালো
স্বপ্নদ্রষ্টাদের জন্য, এবং প্রতিটি মনোরম তেজোময়তার---
অন্ধকার যা গড়ে তোলে তাকে ধ্বংস করো
আর কবির হৃদয়ের গভীরে যে নৈঃশব্দ আছে তাকে ।”

তোমার নৃত্যরত আলোর যোগফল, হে সূর্য,
আমার প্রতিরোধের আগুনের চেয়ে দুর্বল,
আর তোমার আগুনের উন্মাদনা আমার সঙ্গীতকে কখনও নষ্ট করতে পারবে না
যতক্ষণ আমার গানের বাজনা আমার হাতে রয়েছে ।
যদি তুমি পৃথিবীকে ঢেকে দাও, মনে রেখো
আমি আমার মন্দির থেকে তোমার রশ্মিদের বিদায় করব
আর যে অতীতকে মহিমান্বিত করেছ তাকে কবর দেবো
যাতে সুন্দর রাত আচ্ছাদন গড়ে তোলে
আমার আগামী দিনের ওপরে ।”
                               
শব্দের জন্য প্রেমের গান
কেন আমরা শব্দদের ভয় পাই
যখন তাদের রয়েছে গোলাপি-তালু হাত,
সুগন্ধিত, আমাদের গালে আলতো হাত বুলোয়,
আর স্বাদু মদের গেলাসভর্তি
পান করে, গ্রীষ্মে, তৃষ্ণার্ত ঠোঁট দিয়ে ?

কেন আমরা শব্দদের ভয় পাই
যখন তাদের মধ্যে রয়েছে অদেখা কাঁসরঘণ্টা,
আমাদের বিপর্যস্ত জীবনে যাদের প্রতিধ্বনি ঘোষণা করে
মনোরম ভোরের কালখণ্ডের আগমনকে,
ভালোবাসায় আর জীবনে পুরাদস্তুর সিক্ত ?
অতএব কেন আমরা শব্দদের ভয় পাই ?

আমরা নৈঃশব্দের মাঝে আনন্দ উপভোগ করি ।
আমরা স্হানু হয়ে যাই, এই ভয়ে যে গুপ্ততথ্য আমাদের ঠোঁট ছেড়ে চলে যাবে।
আমরা ভেবেছিলুম শব্দের ভেতরে পাতা আছে অদেখা লাশখোর পিশাচ,
কুঁজো, সময়ের কান থেকে অক্ষরের দ্বারা লুকোনো ।
আমরা তৃষ্ণার্ত অক্ষরদের শেকল পরালুম,
আমরা ওদের নিষেধ করলুম আমাদের খাতিরে রাত্রীকে বিছিয়ে দিতে
গদির মতন, সঙ্গীত ঝরে পড়ছে, স্বপ্ন,
আর উষ্ণ পেয়ালা ।

কেন আমরা শব্দদের ভয় পাই ?
তাদের মাঝে আছে মসৃণ মিষ্টতার শব্দ
যার অক্ষরগুলো আমাদের দুই ঠোঁট থেকে আশার উষ্ণতা পেয়েছে,
এবং আরওকিছু, আনন্দে উৎসবমত্ত
দুটি মাতাল চোখ নিয়ে সাময়িক আহ্লাদের ভেতর দিয়ে গেছে।
শব্দেরা, কবিতা, কোমলভাবে
আমাদের গালে হাত বোলাবার জন্য ফিরে দেখেছে, আওয়াজ
যা, তাদের প্রতিধ্বনিতে ঘুমিয়ে, গাঢ় রঙে রাঙানো, এক ফুরফুরে,
এক গোপন আকুলতা, লুকোনো আকাঙ্খা ।

কেন আমরা শব্দদের ভয় পাই ?
কখনও যদি তাদের কাঁটা আমাদের আহত করে থাকে,
তারা তো তাদের বাহু দিয়ে আমাদের গলা জড়িয়ে ধরেছে
আর আমাদের ইচ্ছায় মাখিয়েছে তাদের মিষ্টি সুগন্ধ ।
যদি তাদের অক্ষর আমাদের বিদ্ধ করে থাকে
আর বিতৃষ্ণায় আমাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে থাকে
তারা তো আমাদের হাতে দিয়ে গেছে ম্যাণ্ডোলিন
আর আগামীকাল তারা আমাদের ওপর জীবনের বৃষ্টি ঝরাবে ।
তাই আমাদের গেলাসদুটো শব্দ দিয়ে কানায় কানায় ভরে দাও !

আগামীকাল আমরা নিজেদের জন্য শব্দের স্বপ্ননীড় তৈরি করব,
বেশ উঁচুতে, তার অক্ষরদের থেকে ঝুলবে আইভিলতা ।
আমরা তার কুঁড়িদের কবিতা দিয়ে লালন করব
আর শব্দ দিয়ে তাদের ফুলে জল দেবো ।
ভিতু গোলাপফুলের জন্য আমরা বারান্দা গড়ব
শব্দ দিয়ে গড়া থামের ওপরে,
আর এক শীতল হলঘর যা হবে গভীর ছায়াময়,
শব্দদের পাহারায় ।

আমাদের জীবন আমরা প্রার্থনা হিসাবে নির্ণয় নিয়েছি
কার কাছে আমরা প্রার্থনা করব...কেন শব্দদের ?

No comments:

Post a Comment