Saturday, May 25, 2019

লুই আরাগঁ-র পরাবাস্তব কবিতা । অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী

লুই আরাগঁ-র পরাবাস্তব কবিতা
অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী

সর্বনাশের মাঝে চিৎকারের কবিতা
চলো থুতু ফেলা যাক দুজনে মিলে থুতু ফেলি
যা আমরা ভালোবেসেছি তার গায়ে
যা আমরা দুজনে ভালোবেসেছি
হ্যাঁ কেননা এই কবিতা আমাদের দুজনের
ওয়াল্টজ সুর আর আমি কল্পনা করি
আমাদের মাঝে যে অন্ধকার আর যা অতুলনীয় ঘটে চলেছে
ফেলে দেয়া আয়নার সংলাপের মতন
মালপত্রের দাবির কোনো জায়গায় ধরা যাক ফোলিনোতে
কিংবা অভের্নুর বোরবুল-এ
কিছু নাম দূরে বজ্রপাতের মতন ভারপ্রাপ্ত
হ্যাঁ আমরা দুজনে থুতু ফেলি এই বিশাল উপত্যকায়
হ্যাঁ কেননা কিছু জিনিস স্হির
কিছু জিনিস
মিলিয়ে দেয় হ্যাঁ চলো থুতু ফেলি
দুজনে মিলে এটা একটা ওয়াল্টজ
এক ধরণের সুবিধাজনক ফোঁপানি
চলো থুতু ফেলি চলো থুতু ফেলি ছোটো মোটরগাড়ির গায়ে
চলো থুতু ফেলি এটা হল নির্দেশ
আয়নাসমূহের ওয়াল্টজ
শূন্যতায় এক সংলাপ
শোনো এই বিশাল উপত্যকায় যেখানে বাতাস
আমরা যা ভালোবেসেছি তা নিয়ে কাঁদে
তাদের একটা হল ঘোড়া পৃথিবীতে কনুই হেলান দিয়ে
অন্যটা একজন মৃত মানুষ চাদর ঝাড়ছে আরেকজন
তোমার পদচিহ্ণের ছাপ আমার মনে আছে এক জনশূন্য গ্রাম
এক পোড়া পাহাড়ের ওপরে
আমার মনে আছে তোমার কাঁধ
আমার মনে আছে তোমার কনুই তোমার চাদর তোমার পদচিহ্ন
আমার মনে আছে একটা শহর যেখানে কোনো ঘোড়া ছিল না
আমার মনে আছে তোমার চাউনি যা পুড়িয়েছিল
আমার ফাঁকা হৃদয়কে মৃত রোমান্টিক কবিতার মতন যাকে একটা ঘোড়া
পাহাড়ের ওপর সেই দিনের মতন তুলে নিয়ে যায়
শহিদ ওকগাছের মাঝ দিয়ে আমার মাতলামি দৌড়োলো
যাস ভবিষ্যবাণীর মতন রক্ত ঝরালো যখন দিনের
আলো নীল ট্রাকের ওপরে মূক পড়ে গিয়েছিল
আমার মনে আছে কতোকিছু
কতো সন্ধ্যা ঘর পায়চারি ক্রোধ
ফালতু জায়গায় থামা
যেখানে সবকিছু সত্বেও রহস্যের রোশনাই ওপরে উঠে গেলো
দূরের ট্রেন ডিপোয় অন্ধ বালকের কান্নার মতন
তাই আমি অতীতের ‘এগিয়ে যাও’-এর সঙ্গে কথা বলে হাসছি
আমার শব্দের আওয়াজে যদি তোমার তেমন অনুভব হয়
ও প্রেম করেছিল আর ছিল আর এলো আর আদর করল
আর আমি অপেক্ষা করলুম আর সিঁড়িতে লক্ষ্য রাখলুম যা ফেটে গেলো
ওফ হিংস্রতা হিংস্রতা আমি একজন ভুতে পাওয়া মানুষ
আর অপেক্ষা করলুম অপেক্ষা করলুম তলহীন কুয়ো
আমি ভাবলুম অপেক্ষা করতে করতে মরে যাবো
নৈঃশব্দ রাস্তায় পেনসিল ছুঁচোলো করছিল
অন্ধকারে মরার জন্য একটা কেসুড়ে ট্যাক্সি চলে গেল
আর অপেক্ষা করল অপেক্ষা করল রোধকরা কন্ঠ
দরোজার সামনে ভাষার দরোজাগুলো
বাড়িগুলোর হেঁচকি আর অপেক্ষা
একটার পর একটা পরিচিত জিনিস তাকিয়ে থাকে
আর অপেক্ষা করে ভুতের মতন দৃষ্টি আর অপেক্ষা করে
দণ্ডিত অপরাধিদের আর অপেক্ষা করে
আর অপেক্ষা করে ধ্যাৎতেরি
আধা-আলো জেল থেকে পালিয়েছে আর হঠাৎ
না মূর্খ না
বোকা
কম্বলের ঘুম ভাঙিয়ে দিলো জুতোটা
আমি ফিরি না সাধারণত
আর ভালোবেসেছি ভালোবেসেছি ভালোবেসেছি কিন্তু তুমি জানতে পারো না কতোটা
আর অতীতেও ভালোবেসেছি
ভালোবেসেছি ভালোবেসেছি ভালোবেসেছি ভালোবেসেছি
ওফ হিংস্রতা
এটা ইয়ার্কি ছাড়া কিছুই নয় ওনাদের বিষয়ে
যারা এমনভাবে কথা বলে যেন প্রেম এক আমোদের কাহিনি
ভান করার ওপরে হেগে দাও
তুমি কি জানো কখন এটা সত্যিকার গল্প হয়ে ওঠে
প্রেম
তুমি জানো
যখন প্রতিটি শ্বাস বিয়োগান্তক হয়ে যায়
যখন দিনের রঙগুলোও হাস্যকর
ছায়ায় এক প্রতিচ্ছায়াকে ওড়াও একটা নাম ছুঁড়ে দেয়া
যে সবকিছুই পোড়ে তুমি জানো অন্তরে
যে সবকিছুই পোড়ে
আর তুমি বলো যে সবকিছু পুড়তে দাও
আর আকাশ হল ছড়িয়ে দেয়া বালির স্বাদ
প্রেম করো জারজ কোথাকার তোমাদের জন্য প্রেম
যখন একসঙ্গে শোয়ার ব্যবস্হা করে ফেলবে
ব্যবস্হা করে ফেলবে
আর তারপর হা হা যাবতীয় ভালোবাসা তার মধ্যে
আর তারপর
আমরা ব্যাপারটা কি তা আলোচনা করি
বহু বছর একসঙ্গে শোবার জন্য বুঝতে পারছ তুমি
বছরের পর বছর
নৌকোর পালের ডিগবাজির মতন
কুষ্ঠরোগিতে ঠাশা জাহাজের ডেকের ওপরে
সম্প্রতি একটা ফিল্মে দেখেছিলুম
শাদা গোলাপটা লাল গোলাপের মতন মরে যায়
তাহলে সেটা কি যা আমাকে এই উত্তেজনা পর্যন্ত তুলে আনে
এই শেষ কথাগুলোয়
শেষ কথা হয়তো একটা কথা যাতে
সবকিছু নিষ্ঠুর মেরামতের অতীত নিষ্ঠুর
ছিঁড়ে কুচুকুচি করা শব্দ জাগুয়ার শব্দ বিদ্যুৎ
চেয়ার
প্রেমের শেষ কথা কল্পনা করো
আর শেষ চুমু আর শেষ
প্রশান্তি
আর শেষ ঘুম ইয়ার্কি নয় এটা মজার
গত রাতের কথা ভাবছি
আহ সবকিছু জঘন্য অর্থময়তার চেহারা নেয়
আমি বলতে চাইছি শেষ মুহূর্ত
শেষ বিদায় আর শেষ মরণশ্বাস
শেষ চাউনি
আতঙ্ককর আতঙ্ককর আতঙ্ককর
বহু বছর যাবত আতঙ্ককর
চলো থুতু ফেলা যাক
যা একসঙ্গে ভালোবেসেছে তার গায়ে
ভালোবাসায় থুতু ফেলা যাক
আমাদের অগোছালো বিছানায়
আমাদের মৌনতায় আর আমাদের আধো-আধো কথায়
নক্ষত্রের গায়ে তারা হলেই বা
তোমার চোখ দুটি
সূর্যের গায়ে হলেই বা
তা তোমার দাঁত
অনন্তকালের ওপরে হলেই বা
তা তোমার হাঁ-মুখ
আর আমাদের ভালোবাসার গা্য়ে
হলেই বা তা
তোমার প্রেম
হ্যাঁ থুতু ফেলা যাক

এলসার হাতদুটি
অস্হিরতার জন্য তোমার হাত দুটি দাও । তোমার হাত দুটি আমাকে দাও যাতে আমি স্বপ্ন দেখি, আমি স্বপ্ন দেখি আমার নিঃসঙ্গতায় । তোমার হাত দুটি দাও, তাহলে আমি রক্ষা পাবো । যখন আমি তাদের আমার দুর্বল হাতের মুঠোয় নিই আর ভয়, বিভ্রম আর তাড়াতাড়ি । যখন আমি পরাজয়কে তুষারের মতন মেনে নিই, যা তোমার আঙুলের ফাঁক দিয়ে সর্বত্র চলে যায় । তুমি কি ককনও জানবে না কি আমাকে বেঁধে, আর আমি প্রথম থেকেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। গভীর ভাষা বলে এটা কী ভাবে, জান্তব সংবেদনের এই বোবা কথাবার্তা । কোনো মুখ নেই আর চোখ নেই, আয়নায় প্রতিফলন নেই । প্রেমের এই শিহরণ কোনো শব্দ প্রয়োগ করে না । তুমি জানতে পারবে না তোমার আঙুলগুলো কি চিন্তা করে, তাৎক্ষণিক সিলমোহরের শিকার । তুমি কখনও জানতে পারবে না কি তাদের নৈঃশব্দ, এক ঝলকানি তা জানবে না । তোমার হাতদুটি আমাকে দাও, কেননা আমার হৃদয় মানবে না । কিছুক্ষণের জন্য অন্তত পৃথিবীকে আড়াল করে দাও । তোমার হাতদুটি আমায় দাও, কেননা আমার আত্মা ঘুমোতে যাবে, কেননা আমার আত্মা অনন্তকালের জন্য ঘুমিয়ে পড়বে ।

শান্তির কথা বলো
আমি শান্তির কথা বলি ফ্যাকাশে আর হঠাৎ
বহুকাল আগে দেখা স্বপ্নের আনন্দের মতন
সেই স্বপ্নের মতন যা তুমি বড়োজোর
মনে করবে পেয়েছো
আমি একজন নারীর মতন শান্তির কথা বলি
আমি দরোজা খুলে ধরব আর তক্ষুনি
আমার আত্মাকে ঘিরে তার দুই বাহু আর
আমার গলা জড়িয়ে
আমি পুরোনো জানালায় শান্তির কথা বলি
যা সুন্দর সকালে পাল্লা ঝাপটায়
যখন সমগ্র দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে কেবল
গুল্মের সুগন্ধ
আমি শান্তির কথা বলি যাতে তা আলোকিত করতে পারে
নতুন ঋতুতে তোমার পদক্ষেপ
কিন্তু সাধারণ ব্যাপারের মতন
যে কোনও বাসায়
পাখিদের জন্য আর ঝোপঝাড়ের জন্য
জলের ওপরে সবুজ আর কালো
আর ছোটো ব্যস্ত মাছটার খাতিরে
স্রোতের মধ্যে
আমি সমস্ত নক্ষত্রের জন্য শান্তির কথা বলি
দিনের প্রতিটি ঘণ্টার জন্য
প্রতিটি ছাদের টালির আর তোমার জন্য
ছায়া ও ভালোবাসা
আমি শৈশবের খেলার জন্য শান্তির কথা বলি
যেখানে তুমি দৌড়োও আর লাফাওম হাসো আর কাঁদো
যেখানে তুমি চিন্তার প্রবাহ হারিয়ে ফ্যালো
বিশাল ঘাসভূমিতে
আমি শান্তির কথা বলি কিন্তু এটা অদ্ভুত
ভয়ের এই বোধ যা আমার রয়েছে
কেননা আমার হৃদয় নিজেই পালটে যায়
আস্তে আস্তে
আমি শান্তির কথা বলি যাই হোক না কেন
অনিশ্চিত ঠুনকো কন্ঠস্বরহীন
কেননা ব্যাপারটা মৌমাছির মতন যে কাজ করে চলে
যদিও তা দেখা যায় না
নিছক পাতার মাঝে হঠাৎ মৃদুমন্দ বাতাস
নিছক সরল ইতস্ততভাব
চৌকাঠে সূর্যরশ্মি
আমাদের কামনার
শান্তি থমকে যায় যেন অনিশ্চিত
সম্প্রতি রোগমুক্ত লোকের পদক্ষেপের মতন
তখনও পঙ্গু-করা জখমে আটক
আর কেমন করে তাদের রক্ত বেরিয়েছিল
যুদ্ধ নিজের শক্ত লাগামকে ঢিলে করে
যুদ্ধ এমনকি নিজের লড়াই হেরে গেছে
যা টিকে আছে তা বিষণ্ণ স্তব্ধতা
মামুলি গদি-বসানো
গাড়িগুলো ব্যারাকে ফিরে যাচ্ছে
আর তবু যৎসামান্য আওয়াজ করছে
আমরা আলফালফা গাছের মাঝে নাচবো
যতক্ষণ না রাত নামে
তুমি কাল দেখতে পাবে তুমি পাবে
খেলার মাঠে স্কুলের বাচ্চাদের
আর সুন্দর আবহাওয়া যদিও তেমনটা নয়
যা বলা হয়েছিল
এবার আমরা নতুন যৌবনের জন্য লড়ব
বাড়িঘরের আর আনন্দের দিনকালের জন্য
আর প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য যারা চায়
একাধিক বাচ্চা
আমরা আগেকার মতন একত্রিত করব
আমাদের  পৃথিবীর পোড়া বিস্ময়ের মাঝে
জীবন ফিরে পাওয়া যাবে তোমার
মিনতি করার দরকার হবে না
তাযাতাড়িই তুমি চাইবে আমি নামকরণ করি
আমরা যে নতুন প্রাসাদ গড়ব তাদের
মানুষের মনের সুর
আর আমাদের অবাস্তব পরিকল্পনা
আর বিশাল রসায়ানাগার
যেখানকার অলৌকিক ঘটনাগুলো মানুষের
আর ইতিহাসের স্তম্ভ
আমাদের আয়ত্তে
আমি জানি আমি জানি এগুলো করতে হবে
এই শতকে যেখানে মৃত্য ডেরা বেঁধেছে
আর শান্তির জন্য সর্বত্র সন্ধান করতে হবে
তা বেশ দূরে
ছড়ানো ছোটো আগুনগুলো মিইয়ে নিভে যায়
যে কেউ দেখতে পারে তা কেমন
কেউ একজন  সব সময় নেকড়েকে দেবে
থাকার জায়গা
কেউ কোথাও সব সময় স্বপ্ন দেখবে
টেবিলে ঠোকা ঘুসি হয়ে ওঠার
আর সন্ধির কাপড়ের তলায়
কিছুই ঘটে না
আমি জানি আমি জানি একজন যা বলতে পারে
আর ঘুমিয়ে পড়ার বিপদাশঙ্কা
মানুষ কেমন করে  সবচেয়ে ভালো আর সবচেয়ে খারাপ অবস্হায়
এক সমস্যা
আমি জানি কিন্তু তা সত্বেও শান্তি
দানবটা আমাদের সামনে থেকে পিছিয়ে যায়
এই যা আমি প্রতিরোধ করি যে আমি ভালোবাসি
চিরকাল বেঁচে থাকে
শান্তির কথা যা জনগণ জানে
কমবেশি সবকিছুই অস্পষ্টভাবে
ক্রীতদাসের মালিকের বিরুদ্ধে
সাক্ষী হবার জন্য
এ হল জনগণের শান্তি
গভীর মুক্তির গর্জনে কালা
এ হল দামামা বাজানোর স্তব্ধতা
যখন মে মাস আরম্ভ হয়েছে
এ হল প্রমাণে রাঙানো শান্তি
যেখানে খুনি তার নাম রেখে গেছে
যার কাছে বিধবার অবগুন্ঠন
চিৎকার করে বালে না !
এ হল শান্তি যা হত্যা করতে বাধ্য করে
হাঁটুমুড়ে স্বীকৃতি দেবার জন্য
আর বলির প্রাণীর সঙ্গে চিৎকার করে বলে
হত্যা বন্ধ করো !

স্তবগান
ওরা মানুষকে পৃথিবীতে পুনরধিষ্ঠিত করেছে
ওরা বলেছে তুমি খেতে পাবে
এবং তুমি খাবে
ওরে পৃথিবীতে স্বর্গ বসিয়েছে
ওরা বলেছে দেবতারা বিনষ্ট হয়ে যাবে
এবং দেবতারা বিনষ্ট হয়ে যাবে
ওরা পৃথিবীর একটা অট্টালিকাগৃহ তৈরি করেছে
ওরা বলেছে আবহাওয়া খুব সুন্দর হবে
এবং আবহাওয়া সুন্দর হবে
ওরা পৃথিবীতে একটা গর্ত খুঁড়েছে
ওরা বলেছে আগুন বিস্ফোরণ ঘটাবে
এবং আগুন বিসজফোরণ ঘটাবে
পৃথিবীর মালিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে
ওরা বলেছে তুমি পথ করে দেবে
এবং তুমি পথ করে দেবে
ওরা পৃথিবীকে নিজের কবজায় নিয়েছে
ওরা বলেছে কালো হয়ে উঠবে শাদা
এবং কালো হয়ে উঠবে শাদা
দেশগুলো আর পৃথিবীর গৌরব হোক
বলশেভিক দিনগুলোর সূর্যের গৌরব হোক
বলশেভিকদের গৌরব হোক

আনন্দময় ভালোবাসা বলে কিছু নেই
মানুষ কখনও কোনোকিছু সত্যিই আয়ত্তে নিতে পারে না
তার শক্তিক্ষমতা নয়, তার দুর্বলতা নয়, তার হৃদয়ও নয়
আর যখন সে দুই হাত মেলে ধরে তার ছায়া হয়ে যায় একটা ক্রুসচিহ্ণের
আর আখন সে আনন্দকে আলিঙ্গন করতে চায়ে সে তাকে পিষে ফ্যালে
তার জীবন এক অদ্ভুত ও মর্মান্তিক বিবাহবিচ্ছেদ
আনন্দময় ভালোবাসা বলে কিছু নেই

ওর জীবন সে সৈন্যদের মতন যাদের হাতে অস্ত্র নেই
আমাদের অন্য ভাগ্যের পোশাক পরানো হয়েছে
কেন ওদের ভোরবেলায় উঠতে হবে
যখন রাত তাদের অলস হিসাবে পায়, অনিশ্চিত
এই কথাগুলো বলে, আমার জীবন, আর চোখের জল সামলে রাখো
আনন্দময় ভালোবাসা বলে কিছু নেই

আমার সুন্দর প্রেমিকা, আমার প্রিয়তমা, আমার অশ্রুবিন্দু
আমি এক আহত পাখির মতন নিজের ভেতরে তোমাকে বয়ে বেড়াই
আর যারা তা জানে না আমাদের দেখে পাশ দিয়ে চলে যায়
এই কথাগুলো আমার সঙ্গে বলো যাদের আমি বিনুনিতে বেঁধেছি
যা তোমার বড়ো চোখের জন্য সরাসরি মারা গেলো
আনন্দময় ভালোবাসা বলে কিছু নেই

যতোদিনে আমরা শিখে নেবো তার আর সময় থাকবে না
আমাদের হৃদয় রাতে একসঙ্গে কাঁদুক
ন্যনতম গানের জন্য কতোটা নিরানন্দ প্রয়োজন
মৌজমস্তির দাম দিতে কতোটা পশ্চাত্তাপ চাই
গিটারের বাজনার জন্যে কতোগুলো অশ্রুবিন্দু দরকার
আনন্দময় ভালোবাসা বলে কিছু নেই

ব্যথা ছাড়া ভালোবাসা হয় না
আঘাত ছাড়া ভালোবাসা হয় না
ফুরিয়ে যাওয়া ছাড়া ভালোবাসা হয় না
দেশকে ভালোবাসা তোমাকে ভালোবাসার চেয়ে বড়ো
ফোঁপানিতে টিকে থাকা ছাড়া ভালোবাসা হয় না
আনন্দময় ভালোবাসা বলে কিছু নেই
কিন্তু আমাদের দুজনার প্রতি আমাদের ভালোবাসা


No comments:

Post a Comment