Thursday, May 16, 2019

স্টিফেন মালার্ম-এর কবিতা -- অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী



সুখ-কামনার জন্য এই মদ্যপান
কিছু নয়, এই ফেনা, কুমারী কবিতা
তুলে ধরেছে কেবল পানপাত্র :
বহু দূরে এক দল মোহিনী দানবী ডুবছে
অনেকের মাথা প্রথমে ।
আমরা পাল তুলেছি, হে আমার অনেকানেক
বন্ধুগণ, আমি আগে থেকেই জাহাজের পেছনদিকে,
তুমি অবাধ সামনেদিকে যা মন্হন করছে
বজ্রবিদ্যুতের আর শীতের বানভাসিদের :
এক মিষ্টি নেশা আমাকে অনুপ্রাণিত করছে
নোঙর ফেলা সত্বেও, দোলাচ্ছে, অকুতোভয়
সুখ কামনার এই মদ উৎসর্গ করতে যখন কিনা সরল
একাকীত্ব, জলগর্ভ, আর নক্ষত্রের গোমটা
যা কিছু জ্ঞানলাভের যোগ্য তাদের উদ্দেশে
আমাদের পালের শ্বেত উদ্বেগের উদ্দেশে ।
অকার্যকর আবেদন
রাজকন্যা ! হিবির ভাগ্যের প্রতি ঈর্ষায়
তোমার ঠোঁটের চুমুর কাছের পেয়ালার ওপরে,
আমি আমার আগুন খরচ করি বিশপের তনুদেহী অবস্হায়
আর কখনও ফাঁকা এনামেল থালার নকশাকাটা ঘরে ।
যেহেতু আমি তোমার আদর-খাওয়া কুকুরছানা নই,
লজেনচুষ, রুজ কিংবা ভাবপ্রবণ খেলা
আর জানি তোমার আমার দিকে জানালা-ফাঁকের চাউনি
শ্বেতাঙ্গী যারা তোমার বিনুনি বাঁধে তাদের আছে স্বর্ণকারদের নাম !
নাম বলো...তোমার হাসিতে স্ট্রবেরি-ঠাশা
ভিরু ভেড়ার পালের সঙ্গে মিলেমিশে যায়
সবখানে ঘাসচরার অঙ্গীকার ভেড়ার ডাকের আনন্দে,
নাম বলো...যাতে ডানা-লাগানো প্রেমের পাখা
আমাকে সেখানে আঁকে, খোঁয়াড়ে শান্ত করে, হাতে বাঁশি নিয়ে,
রাজকন্যা, তোমার হাসির মেষপাপলকের নাম বলো ।


এক আফ্রিকি নারী
ভুতে পাওয়া এখন এক আফ্রিকি নারী
অদ্ভুত ফলে দুঃখি এক খুকিমেয়ের স্বাদ নেবে
ছেঁড়া পোশাক নিষিদ্ধ যারা তাদেরও,
এই অতিভোজী একাধটা ছলনার জন্য তৈরি :
ওর পেটে ঝোলানো যমজ দুই ভালোভাগ্য মাই
আর, এতো উঁচু যে কেউ জানেনা কেমন করে ওকে জড়াবে,
ওর জুতো-পরা পা ফেলার অন্ধকার অভিঘাত
তেমনই জিভ যা আনন্দ নিতে শেখেনি ।
গজলা-হরিণের ভীরু নগ্নতার মুখোমুখি
যা শিহরিত হয়, পিঠের ওপরে পাগল হাতির মতন
উলটো হয়ে অপেক্ষা করে, ও প্রগাঢ়ভাবে নিজেকে ভালোবাসে,
একটা বাচ্চার দিকে দাঁত বের করে হাসে :
আর, দুই পায়ের মাঝে যেখানে শিকার শোয়ানো,
চামরের তলাকার কাটা কালো মাংস তুলে নিয়ে
অচেনা মুখের ভেতরে এগিয়ে দেয়
ফ্যাকাশে, গোলাপি যেন লাতিন আমেরিকার কামান-গোলা ।

মর্মপীড়া
আজ রাতে তোমার মাংস জয় করতে আসিনি, হে জানোয়ার
জাতির পাপ যার রয়েছে, ঘাঁটাতেও আসিনি
তোমার নোংরা বিনুনির তলাকার শোকাবহ ঝড়কে
মারাত্মক অবসাদের তলায় আমার চুমুগুলো ঝরে পড়ে :
স্বপ্নহীন এক গভীর ঘুম গুঁড়ি মেরে ঢোকে
অজানা আত্মগ্লানির পর্দার পেছনে, আমি তোমার বিছানার কথা জিগ্যেস করি,
তোমার কালো জোচ্চুরির পর যে ঘুমের তুমি মজা নাও,
তুমি যে মৃতের চেয়ে শূন্যতার বিষয়ে কিছুই জানো না ।
কেননা কলঙ্ক, আমার জন্মগত আভিজাত্যকে খেয়ে ফেলছে
আমাকে চিহ্ণিত করেছে, তোমার মতন, নিজের নপুংসকতা দিয়ে,
কিন্তু শবাচ্ছাদনের ভুতে-পাওয়া, ফ্যাকাশে, বিধ্বস্ত, আমি পালাই
যখন সেই হৃদয় যা কোনো অপরাধের কাঁটা নয়
তোমার পাষাণ বুকের ভেতরে জীবনকে গুটিয়ে নিতে পারে
একা ঘুমোবার সময়ে আমি মৃত্যুর ভয়ে আতঙ্কিত হই ।


গ্রীষ্মের বিষণ্নতা

সূর্য, বালির ওপরে, হে ঘুমন্ত কুস্তিগির,
তোমার চুলের সোনায় উষ্ণ ধীরুজ স্নান করে নিচ্ছে,
তোমার শত্রুতাপূর্ণ চেহারায় গলিয়ে নিচ্ছে ধুনো,
চোখের জলে মিশিয়ে নিচ্ছে প্রণয়ের রস ।
এই শ্বেতাভ প্রজ্বলনের পরিবর্তনাতীত শান্তি,
হে আমার ভিরু চুমুরা, তোমাকে দিয়ে বলাচ্ছে, হায়,
‘আমরা কি কখনও মমি হয়ে যাওয়া আচ্ছাদন হবো,
প্রাচীন বালিয়াড়ি আর খেজুরগাছের তলায় এতো আনন্দে ?’
কিন্তু তোমার চুলের থোকা এক ঈষদুষ্ণ নদী,
যাতে ডুবে যায় আমাদের ভুতে-পাওয়া আত্মা ডুবে যায়, কোনো কাঁপুনি ছাড়াই
আর সেই শূন্যতাকে খুঁজে পায় যা তুমি জানতে পারবে না !
আমি তোমার চোখের পাতার তীরভূমির মলমের স্বাদ নেবো,
দেখার জন্য যে হৃদয়কে দিতে পারে কিনা, তোমার আঘাতে,
পাথরের আর আশমানি রঙের উদাসীনতা ।


ভাঁড়ের শাস্তি

চোখ, পুনর্জন্মের জন্য আমার সরল আবেগের ঝিল
হাতের ভঙ্গী করে এমন অভিনেতা ছাড়া
কলম নিয়ে যেমন, আর লন্ঠনের নোংরা ভুসো ছড়ায়,
আমি যে কাপড় ছিঁড়েছি তার দেয়ালে এখানে এক জানালা।
হাত আর পাসুদ্ধ এক খোঁড়া বিশ্বাসঘাতী সাঁতারু
অসংখ্য ঝাঁপাই ঝুড়ে, অসুখকে অস্বীকার করে
হ্যামলেট ! যেন আমি সমুদ্রের তলদেশে গড়তে আরম্ভ করেছি
হাজার কবরস্তম্ভ : অদৃশ্য্য হবার আগে সেখানে অক্ষত ।
ঘুষি দিয়ে বাজানো খঞ্জনির হাসিখুশি সোনা,
সূর্য তখনই বিশুদ্ধ নগ্নতা মেলে ধরে
যা আমার ঝিনুকের শীতলতা  থেকে নিজেকে শ্বাসে বের করে,
ত্বকের দুর্গন্ধিত রাত, যখন তুমি আমার ওপর ভেসে গেলে,
না জেনে, অকৃতজ্ঞ সে, যা ছিল, এই সাজিয়ে তোলা,
আমার সমগ্র প্রলেপন, বরফ-জল অবিশ্বাসে চোবানো ।

কবিতার উপহার

আমি তোমার কাছে এনেছি পৌরাণিক ইডুমিয়ার রাতের শিশু !
কালো, ফ্যাকাশে নগ্ন রক্তময় ডানায়, আলো
কাচের ভেতর দিয়ে, সোনা আর মশলায় ঘসে চকচকে করা,
শার্শির ভেতর দিয়ে, এখনও বেদনাদায়ক, হায়, আর বরফের মতো ঠাণ্ডা,
নিজেকে ছুঁড়ে ফেললো, ভোরবেলা, দেবদূতের মতন শিখায় ।
খেজুরগাছের পাতা ! আর যখন এই পপত্ন দেখালো, স্যাঁতসেতে,
যে পিতা প্রতিকূল হাসির প্রয়াস করছিলেন তাঁকে,
শিহরিত হলো নিঃসঙ্গতা, আশামানি, বন্ধ্যা ।
হে ঘুমপাড়ানি গান, তোমার মেয়ের সঙ্গে, আর সরলতা
তোমার দুই ঠাণ্ডা পায়ের, এক ভয়ঙ্কর নতুন জীবকে শুভেচ্ছা জানায় :
এক কন্ঠস্বর যাতে বীণা আর বেহালার রেশ থেকে যায়,
তুমি কি সেই বুক চেপে ধরবে, তোমার ক্ষয়িত আঙুল দিয়ে,
যেখান থেকে নারী ভবিষ্যবাণীর শ্বেতাভ থেকে বয়ে যায়
বাতাসের কুমারী নীলাভের দেয়া ক্ষুধার্ত ঠোঁটে ?

ছাগদেহ মানবদেবতা

এই বনউপদেবীদের, আমি তাদের অনন্তকালীন করতে চাইবো ।
কতো উজ্বল
তাদের গাঢ়-লাল মাংস যা ওখানে ভাসছে, আলো
জমাট তন্দ্রায়  হাওয়ায় আচ্ছন্ন
আমি কি এক স্বপ্নকে ভালোবেসেছি ?
আমার সন্দেহ, প্রাচীন রাতের একটানা বিস্তার, চরমে ফুরোয়
কয়েকটা তনুকৃত শাখায়, যে আবশিষ্ট সত্য
বনানীরা নিজেরাই, প্রমাণ করে, হায়, যে আমিও
নিজেকে উৎসর্গ করেছি, একা, জয় হিসাবে, গোলাপের নকল আদর্শ ।
দেখা যাক….
কিংবা যে নারীদের দিকে নজর দিয়েছ
তোমার বিখ্যাত সংবেদনের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটায় !
ছাগদেহ মানবদেবতা, নীল চোখ থেকে বিভ্রম দূর হয়,
শীতল, যেন চোখের জলের ঝর্ণা, সবচেয়ে বিশুদ্ধের :
কিন্তু অন্যজন, নারীটি, সব দীর্ঘশ্বাস, তুমি বলো কি যে বৈসাদৃশ্য ঘটায়
তোমার সলোম চামড়ার ওপরে উষ্ণদিনের বাতাসের মতো ?
না ! অবসন্নতার মাঝে, ভারি আর অনড়
ভোরের শীতল সংঘর্ষকে গরমে কন্ঠরুদ্ধ করে
জলহীন, কিন্তু যা আমার বাঁশি থেকে ঝরে, অসন্তোষ
তরুবীথিকায় সঙ্গীতের ছিটে দিয়ে : আর একমাত্র মৃদুমন্দ বাতাস
যমজ পাইপ থেকে, দ্রুত শ্বাস নেয়
শুকনো বৃষ্টিতে তার শব্দ ছড়িয়ে দেবার আগে,
দিগন্তের কোনো আভাসের দ্বারা অনুত্তেজিত,
শ্বাস যা দেখা যায়, নকল আর অচঞ্চল,
যে উচ্চতা দেখা হয়নি সেখানে ফেরত অনুপ্রেরণায় ।
হে জলজঙ্গলের শান্তিময় সিসিলির তীরভূমি
সূর্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আমার আত্মশ্লাঘা লুন্ঠন করে,
ঝিকমিকে ফুলদলের আড়ালের স্তব্ধতায়, ব-র্ণ-না
‘যে এইখানে আমি  ফাঁপা বেণু-বাঁশ কাটছিলুম পোষ-মানানো
প্রতিভা দিয়ে : যখন, দূরের সবুজ সোনায়
শ্যামলিমা তার আঙুরলতাকে ঝর্ণার কাছে উৎসর্গ করছিল,
এক জান্তব শাদারঙ বাদবাকি সবকিছুকে করছিল তরঙ্গায়িত :
আর পাইপগুলো যে বিলম্বিত সুরের আলাপে রয়েছে
রাজ হাঁসেদের এই উড়াল, না, জলপরীরা ভয়ে জড়োসড়ো হয়
কিংবা ঝাঁপিয়ে পড়ে…’
নিশ্চল, সবকিছু তামাটে সময়ে পুড়তে থাকে
না দেখে কোন সে কৌশলে দুজনে সেখানে পালিয়ে গেলো
যে লোকটা  সেখানে চেয়েছে  সতীচ্ছদের আধিক্য
যা স্বাভাবিক অ: তারপর আমি জেগে উঠব আদিম অসুখে
ঋজু, একা, প্রাচীন বানভাসির তলায়, আলোর ক্ষমতা,
পদ্মফুল ! আর তোমাদের মধ্যে একজন কেবল শিল্পহীনতার জন্য ।
তাদের ঠোঁটে দেখানো এই মিষ্ট শূন্যতা ছাড়া, চুমু
যা কোমলভাবে বিশ্বাসঘাতকতার নিশ্চয়তা দেয়,
আমার বুক, প্রমাণের কুমারীত্ব, রহস্যকে ফাঁস করে
অতিবিশিষ্ট দাঁত বসানো কোনো কামড়ের ;
চলো যাওয়া যাক ! বিশ্বাস হিসাবে বেছে নেয়া অমন গুপ্তকথা,
আশমানি ছাদের তলায় আমরা অসাধারণ যমজ বেণু-বাঁশি বাজিয়েছিলুম,
যা নিজের দিকে গালের কাঁপুনি মেলে ধরেছিল,
স্বপ্নেরা, এক দীর্ঘ একক, যাতে আমরা আনন্দ দিতে পারি
সেই সৌন্দর্যগুলো যা অন্যভাবে ভুল স্বরের মাধ্যমে বোকা বানায়
নিজের আর আমাদের সহজবিশ্বাসী গানের মাঝে ;
আর ভালোবাসা দিয়ে যতোটা সম্ভব হয় গড়তে পারি, কাঁপানো,
মিলিয়ে যাওয়া, বিশুদ্ধ মধ্যবর্তীর সাধারণ স্বপ্নে
কিংবা পেছনে অনুসরণকারী মিটমিটে চাউনি দিয়ে,
এক নাকিসুর, ফাঁকা আর একঘেয়ে পংক্তিতে ।
তাহলে চেষ্টা করো, উড়ালের যন্ত্র, হে অপকারী
শব্দিনী যে ঝিলের পাশে  আমার জন্য অপেক্ষা করো, আবার কুসুমিত হবে বলে !
আমি, নিজের মূর্ছনায় গর্বিত, অনেক কধা বলতে চাই
শুভের ব্যাপারে : এবং ভক্তিশীল ছবিসহ
ছায়া থেকে তাদের কোমরের বাঁধন সরিয়ে ফেলবো :
তাই যখন আঙুরের ঔজ্বল্য চুষে নিয়েছি
আমার ভানে বানানো একটা পশ্চাত্তাপকে নির্বাসন দেবার জন্য,
হাসতে-হাতে, আমি ফাঁকা বাঁশিকে আকাশের দিকে তুলে ধরি
আর উজ্বল ত্বকে নিঃশ্বাস ফেলে, তারপর আমি,
মাতলামির আকাঙ্খায়, তার ভেতর দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখি ।
হে জলপরীর দল, আবার বহু স্মৃতি থেকে ওঠা যাক ।
‘আমার চোখ, বেণু-বাঁশকে ছ্যাঁদা করে, বর্শা গেঁথেছে প্রতিটি অমর
কন্ঠকে যা তার জ্বলনকে জলে চোবায়
জঙ্গলের আকাশের দিকে ফিরে ক্রুদ্ধ চিৎকার করে ;

আর চুলের চমৎকার স্নান স্খলিত হয়ে গেল
ঔজ্বল্য আর শি্রণে, হে মণিরন্তগণ !
আমি সেখানে ছুটে যাই : যখন, আমার পায়ে, ফিতেবাঁধা ( আহত
অবসন্নতা দিয়ে পরখ-করা যে দুজন-হওয়া অশুভ )
মেয়েরা নিজেদের বাহুডোরের একমাত্র বিপদে ঘুমোচ্ছে :
আমি তাদের জড়াজড়ি না খুলেই তুলে নিয়ে পালাই
রোদে নষ্ট হতে থাকা এই গোলাপের কিনারায়
যাবতীয় সুগন্ধ, চপল ছাবার দ্বারা ঘৃণিত
যেখানে আমাদের আমোদ হওয়া উচিত বিলীয়মান দিনের মতন ।’
আমি তোমার সমাদর করি, কুমারীদের প্রতিহিংসা, হে লজ্জিত
নগ্ন পবিত্র ভারের পরমানন্দ যা ধীরে ভেসে
চলে যায় আমার তপ্তঠোঁট এড়াতে, পান করে
মাংসের গোপন সন্ত্রাস যেন শিহরিত
বজ্রবিদ্যুৎ : মুণ্ডহীনের দুই পা থেকে
ভিরুর হৃদয় পর্যন্ত, এক মুহূর্তে পরিত্যক্ত
নিরীহ বুনো কান্নায় কিংবা কম দুঃখি বাষ্পে ভিজে গিয়ে ।
‘বিশ্বাসঘাতক ভয়কে জয় করায় আনন্দিত
আমার অপরাধ ছিল অবিন্যস্ত জটপাকানো
চুমুগুলো যা দেবতারা ভালো করে মিলমিশ করেছিলেন :
কেননা আমি জোরে-জোরে হাসি চাপা আরম্ভই করেছিলুম
একটি মেয়ের আহ্লাদী গভীরতায় ( থামিয়ে রেখে
শুধু একটা আঙুল দিয়ে, যাতে তার পালকবৎ সারল্য
তার তপ্ত বোনের কামাবেগ দিয়ে রঙিন হতে পারে,
ছোটোটা, হাবাগবা আর লজ্জায় লাল হয়নি )
আমার আলিঙ্গন থেকে, অস্পষ্ট মৃত্যু দিয়ে অকার্যকর,
এই শিকার, সবসময় অকৃতজ্ঞ, নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেলো
যে ফোঁপানিতে আমি মাতাল ছিলুম তাকে সমবেদনা জানালো না।’
কিছুই এসে যায় না ! অন্যেরা আমাকে আনন্দের দিকে নিয়ে যাবে
বেশ কয়েকটা বিনুনিচুলে আমার ভ্রুর ওপরের শিঙ ধরে :
তুমি তো জানো, আমার আবেগ, আগেই কতো ঘন আর বেগুনি
প্রতিটি ডালিম ফেটে পড়ে, গুঞ্জন করে মৌমাছিদের সঙ্গে :
আর আমাদের রক্ত, যা তাকে দখল করবে তার দ্বারা প্রেমমুগ্ধ,
বয়ে চলে যাবতীয় আকাঙ্খার শাশ্বত ঝাঁকে ।
সেই ক্ষণে যখন সোনা আর ছাইয়ের এই বনানী স্ফীত হয়
নেভানো পাতায় উত্তেজিত হয়ে ওঠে উৎসব :
আগ্নেয়গিরি এটনা ! এটা তোমার ক্রমাবনত ঢালে, ভিনাস এসেছিলেন
তোমার লাভায় তাঁর সিল্পহীন গোড়ালি রেখেছিলেন,
যখন এক দুঃখি তন্দ্রা বাজ ফেলেছিল যেখানে এখন দাউদাউ আগুন ।
আমি রানিকে সামলাই !
হে নিশ্চিত শাস্তি…
না, বরং আত্মা
শব্দশূন্য, আর এই ভারি দেহখানা,
দুপুরের গর্বিত স্তব্ধতায় ক্রমশ বশীভূত হয় :
কোনো রকম কর্মব্যস্ততা ছাড়াই, ঈশ্বরনিন্দা ভুলে গিয়ে, আমাকে
অবশ্যই ঘুমোতে হবে, তৃষ্ণার্ত বালিয়াড়িতে শুয়ে, আর যেমন আমি
ভালোবাসি, মদের সত্যকার গ্রহপ্রভাবে হাঁ-মুখ খুলে ধরি !
বিদায়, তোমাদের দুজনকেই : তুমি যে ছায়া হয়ে গেছ তা আমি দেখতে যাচ্ছি।

No comments:

Post a Comment