Wednesday, May 22, 2019

ত্রিস্তঁ জারা-র ( ১৮৯৬ - ১৯৬৩ ) কবিতা । অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী




ত্রিস্তঁ জারা-র ( ১৮৯৬ - ১৯৬৩ ) কবিতা
অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী

দূরহঙ্কার-বর্জিত ঘোষণা
যে নতুন পৃথিবীর জন্ম হবে তার জন্যে ঘুমোতে যাবে শিল্প
“শিল্প” --- টিয়াপাখির বুলি -- তার জায়গায় এসেছে ডাডা
প্লেসিওসরাস অথবা রুমাল

দক্ষতা যা শেখা যায় তা বানায়
কবিকে মনোআরী দোকানদার আজকের সমালোচনা
সাদৃশ্য আর সুষমতা সম্পর্কে আপত্তি করে না

অতপেটুক চিত্রকররা অতি
নান্দনিক এবং কচুরিপানা দিয়ে সন্মোহিত
ভণ্ড চেহারার সে এক মুয়োজ্জিন

ফসল সংগ্রহ করে রাখুন স---
ঠিক গননার

অমর জামানতের উযোজাহাজ : এমন কোনও
নিজিস নেই যা গুরুত্বপূর্ণ কোনও আলোকভেদ্যতা নেই
দৃষ্টিগ্রাহ্যতার

বাদ্যকরগণ নিজেদের নিজের সঙ্গীতযন্ত্র ভেঙে চুরমার করুন
অন্ধগণ দখল করুন মঞ্চ

পিচকারি কেবল আমার বোধশক্তির জন্য । আমি লিখি কেননা তা হল
স্বাভাবিক ঠিক যেমন আমি হিসি করি আমি অসুখে পড়ি

শিল্পের অস্ত্রোপচার দরকার
শিল্প হল এমন এক ভণ্ডামি যা মুত্ররোগের ভিরুতার সাহায্যে
উদ্দীপ্ত, এমন এক মৃগীরোগ
যার উৎস হল স্টুডিও

আমরা খুঁজে চলেছি
সেই কর্মশক্তিকে যা প্রত্যক্ষ বিশুদ্ধ অপ্রমত্ত
অদ্বিতীয় আমরা কিছু-নয় খুঁজছি
আমরা হলফ করে বলছি জীবনীশক্তির প্রতিটি তাৎ
ক্ষণিক
স্বতঃস্ফূর্ত দড়াবাজির অ-দার্শনিকতা

যে লোক ফিসফিস করে কথা বলে তাকে ঘৃণা করছি এই মুহুর্তে
অর্ধবিরতির আগে -- ইউ ডি কোলোন --
টোকো-স্বাদ নাটক । উল্লসিত বাতাস

যদি একজন  আরেকজনের বিপরীত কথা বলে তাহলে সে
নির্ভুল

আমাদের রক্ত গরম করার বিদ্যুৎযন্ত্রের জন্য তৈরি হোন
অবরোহের অতীত ডুবোজাহাজ সৃজ উড়ো--
জাহাজ, সংখ্যা আঁকা ছিদ্রবহুল ধাতুতে
চিত্রকল্পের উড়াল

নিয়মনীতির উর্ধ্বে
এবং নিয়ন্ত্রণে

সুন্দরকান্তি

তা করাত দিয়ে কাটা ব্‌জ্জাতদের জনভ নয়
যারা তাদের নাভিকে পুজো করে

গিয়ম অ্যাপলিনার-এর মৃত্য
         এ-ব্যাপারে কিচ্ছু আমাদের জানা নেই
         দুঃখের ব্যাপারে কিচ্ছু আমাদের জানা নেই
বেদনাদায়ক শীতকাল
         গভীর গমনপথ দেগে গেছে আমাদের পেশিতে
জেতার উল্লাস বরং উপভোগ করে যেতে পারতেন উনি
        খাঁচায় পোরা স্তব্ধ বিষাদের ভারে ওঁর জ্ঞান
               কোনোকিছু করতে অপারগ
        যদি তুষার নীচে থেকে ওপরদিকে ঝরে
যদি আমাদের আলোকিত কোরে রাতে সূর্য ওঠে
              আমাদের আরামে রাখার জন্য
       আর রাজমুকুট উলটিয়ে ঝুলে থাকে গাছপালা
              --অভূতপূর্ব চোখের জল---
       নিজেদের দেখার জন্য পাখিরা যদি আমাদের মাঝে থাকতো
আমাদের মাথার ওপরে নিশ্চল জলাশয়ে
       আমরা না-হয় বুঝতে পারতুম
       মৃত্যু হয়ে উঠবে সুন্দরতম সুদূর এক ভ্রমণ
আর জৈবদেহ থেকে কাঠামো থেকে আর হাড় থেকে শেষহীন ছুটি

ঘোড়া
একথা সত্যি জীবনের অমেয় উষ্ণতাকে আমি
বিশ্বাস করেছিলুম । পুরোনো কিন্তু সতত বহমান আদরগুলোকে
গভীর করে তুলেছিল প্রতিটি পদক্ষেপ । হতে পারতো
গাছ, রাত্তির, রাজপথের জঙ্গল কিংবা আকাশের পীড়ামথিত
জীবন, সূর্য তো বটেই ।
আকদিন আমি টের পেলুম একাকীত্ব । পাহাড়চূড়ায় একটা
ঘোড়া, একেবারে একা, স্হির, যে জগতসংসার থমকে থেমে গেছে,
সেখানে পপতিষ্ঠিত । আর হে প্রেম, সময় ভাসমান, তার অশ্মীভূত
স্মৃতিকে করেছিল একত্র । জীবন ও মৃত্যু পরস্পরকে পূর্ণতা
দিয়েছিল, সম্ভাব্য অবিনশ্বরের জন্য প্রতিটি কপাট খোলা ।
একবারটি বস্তুসমূহের অর্থময়তায় সায় না দিয়ে, দেখলুম
দৃষ্টিকে করেছি স্বতন্ত্র, এতো দূর নিয়ে গিয়েছিলুম যাতে
তার সীমা মহাকাল পেরিয়ে যায় । যে দেখতে হবে তা
দেখার দৃষ্টির প্রয়োজন অনুভব করেছিলুম । কিন্তু কেই বা
বলতে পারে প্রতিজ্ঞা পালন করা হয়েছে কিনা ?

জিভের ওপর ষাঁড়
আকাশের টেবিলে আলো । নুড়িপাথর ডাঁই-করা শীতে
ঢুকতে সূর্যের বেশ অসুবিধে হয়েছিল । অবশ্য সেখানেও,
জীবনের খোলতাই, বিষাদ আর আনন্দের মিশেল,
একাকীত্ব আর অনিশ্চয়তা । সৎ চিন্তা থেকে হোক বা
মন্দ চিন্তা থেকে । ওইসব উথ্থানপতন তোমাকে
নিয়ে যায় ভাগ্যের এক ঐকতানে আর তারকাদের
ভাঙন-ব্যবস্হায় । বাতাসের পাপড়ি-বসানো শব্দের
হাট বসে গেছে । যেখানে আমরা আছি, চিরস্হায়ী
পিপাসার মসৃণ ঠোঁট ।

খারিজ
ছোট-ছোট জানালাঠাশা জাহাজ মৃত্যু থেকে নিজেকে মুক্ত করে
স্ফূলিঙ্গে এক-ফোঁটা চোখের জল
নিশ্চুপ সূর্যের রোদে রাঙানো আমার মুখাবয়ব ধরে রাখে
আর ভেঙে পড়ে অগ্নিকাণ্ডে তুমি এখন অনেক দূরে

আমার চোখের জলই আকাশ তুমি দেখতে পাও
যে আদেশ তুমি দাও তা সবই ঘটে
মাটির নিনমাখা শরীর কুয়াশায় কাঁপিয়ে
একক আত্মার তুষার-ভেজা গোঁফ চুমরিয়ে আমি
একজন সন্তের শুশ্রুষায় আটক
এজমালি-মুক্ত স্নায়ুহীন তুমি এখন অনেক দূরে

আমি আমার থেকে নিজেকে পৃথগন্ন করি কিন্তু আমি কি
নকল স্মৃতির মশগুল পতঙ্গের পাঁজা
পৃথিবীর ঠোঁট থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়েছে নৌকো
স্তূপীকৃত মাঝরাতে এক টুকরো ফলের কামড়
কাঁটাঝোপ মানেই অদৃষ্ট তো সেসবে ঠাশা
যথেষ্ট

সত্যিগল্প
বৃষ্টির দৈত্য গ্রীষ্মের শীতল
শূন্য-চমকের হে গভীর
নিশ্চিত ধ্বংসের সাথে ছেনালি করে বেড়িয়েছি সবসময়
আমি কি সেই লোক নই যে বহুদূর থেকে জীবন আর মৃত্যু আঁকতে পারে

তাই আমি আগামী নিসর্গের পাতা ওলটাই
আতঙ্কিত ছিন্নভিন্ন বিশ্বাসী
জৈবমাংসে পৃথিবীর মরাকাঠে গড়া
দূরবস্হায় অটল
পরবর্তীর ঠিক পরের বিরতি

আমি একটা ঘোড়া আমি একজন নদী
আমি আনাড়ির মতন হাঁটি তবুও এগোতে থাকি

ঢেউ
আগুনের ভেতর থেকে বুলেটের শিলাবৃষ্টি করছিল বাতাস
শিখা-প্রশ্বাস বা ব্দুক ছিল না
যেমন আঁটিতে পালিশদেয়া বিচারক শব্দ
তাৎক্ষণিক চূড়ান্ত ভয় চারিধারে
বিশাল একলা রাত পাশ দিয়ে চলে যায়
আর ঘায়ের হাঁ-মুখের পাশে একজন নিশিডাকা মানুষ

কিই বা সে করেছিল কি বুনো স্তব্ধতা
চোয়ালে ঘুষি মেরে জীবনকে সিলমোহর করেছে
তার জীবনের চোয়াল তার যৌবনের ভূমা
জনমানবহীন বসতির গভীরে এক নক্ষত্রের ছড়িয়ে-পড়া

তার মগজে যা ঘোরে ফেরে সে তারই কিছু বোঝে না
থ্যাঁতলানো হাঁটু এধার-ওধার ছেটানো শব্দ
আর শীতল চোখের চারিপাশ ঘিরে
শহর আর তৃণভূমির অদৃশ্য জোয়ার
তাদের তীব্র সূর্যের সর্বসন্মত ইস্পাত

নিষিদ্ধ আগুন
অলস হাসি হেসে বাতিটা নিভে যায়
তছনছ-করা উপত্যকার গভীরে রয়েছে মখমল
জানালায় ছাতাফুলের সঘন কলধ্বনি
সামুদ্রিক গুহায় আঘাতকে ঘিরে রাখা হয়েছে
অনেক দূরে ভেঙে-পড়া পাহাড়তলিতে অনাবাদ পড়ে আছে বাল্যকাল
কীভাবে মরতে হবে না জেনেই চিড়বিড়ে ব্যাপার আসে আর যায়

কোথাও কে জানে এক পাঠক কনুয়ে ভার দিয়ে আছে
দুর্বহ ভারে সমাধির ওপরে পযে তার প্রতিটি ওলটানো পাতা
আনিবানি-খেলা বোন এই রাত কিংবা দুঃখি বুকের
চোখের চেয়ে শৈশবে কাহিল এই রাত
নাটকের খসড়া আর শীতঋতুর বাঁধন
বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ হাতে যেখানে চিহ্ণহীন ঠোঁটের শেষ

No comments:

Post a Comment