Wednesday, August 2, 2023

অঁতনা আতো'র বুদ্ধের শিক্ষালয়ে লেখা একটি চিঠি

 

অঁতনা আতোর ‘বুদ্ধের শিক্ষালয়ে লেখা একটি চিঠি’

অঁতনা আতো’র ১৫ এপ্রিল ১৯২৫-এ লেখা “বুদ্ধের শিক্ষালয়ে লেখা একটি চিঠি”, প্রকাশিত হয়েছিল ‘সুররিয়ালিস্ট’ পত্রিকার তৃতীয় সংখ্যায় । সংখ্যাটার সাবটাইটেল ছিল “১৯২৫ : খ্রিস্টান যুগের সমাপ্তি” । একই সংখ্যায় দালাই লামা, পোপ এবং ‘উন্মাদ আশ্রমের পরিচালকদের’ লেখা তাঁর চিঠি প্রকাশিত হয়েছিল।

আপনারা যাঁরা অবতার, যাঁরা জানেন যে দেহের যৌন গতিপথের কোন বিন্দুতে, তার সংবেদনশীল আসা এবং যাওয়ায়,  আত্মা খুঁজে পায় পরম ক্রিয়াপদ, নবতর বাচন, অভ্যন্তরীণ বনেদ; আপনারা যাঁরা জানেন কীভাবে একজন নিজের চিন্তার মাধ্যমে নিজের কাছে ফিরে আসে এবং কীভাবে আত্মা নিজেকে নিজের থেকে বাঁচাতে পারে; আপনারা যাঁরা নিজেদের অভ্যন্তরে অন্তরীণ; আপনারা যাঁদের কাছে আত্মা আর যৌন পরিসরে নেই তাঁদের  হাত রয়েছে যা কিছুই নিতে চায় না। আপনারা যাঁরা অবতার, যাঁরা জানেন  যৌন গতিপথের কোন বিন্দুতে, তার আসা-যাওয়া সংবেদনশীল নয়, যে আত্মা পরম ক্রিয়াকে খুঁজে পায়, নবতর বাচন, অভ্যন্তরীণ স্থল; আপনারা যাঁরা জানেন কীভাবে একজন চিন্তার মধ্যে নিজের কাছে ফিরে আসে এবং কীভাবে আত্মা নিজেকে নিজের থেকে বাঁচাতে পারে; আপনারা যাঁরা নিজেদের অভ্যন্তরে অন্তরীণ ; আপনার যাঁর জন্য আত্মা আর শারীরিক সমতলে নেই এখানে এমন হাত রয়েছে যাদের জন্য নেওয়াই সবকিছু নয়, মস্তিষ্ক যা জঙ্গলের ছাদের ওপর দিয়ে আরও বেশি দেখতে পায়, মুখের ঝলক, কলুর-বলদ মানুষ এবং আগুন আর শ্বেতপাথরের  কাজ। এগিয়ে চলেছে এই লোহার মানবদল ; অগ্রসর হচ্ছে আলোর গতিতে লেখা শব্দ; বুলেটের ক্ষমতা নিয়ে একে অপরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে যৌনতা : আত্মার পথে কি পরিবর্তন আসবে ? হৃদয়ের টানাপড়েনে ? আত্মার হতাশায় ?




 সুতরাং  জলে ছুড়ে-ছুঁড়ে ফেলে দিন  সমস্ত ফোঁপরা  শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের যারা তাদের ছোট মাথা আর ভাল আচরণকারী মন নিয়ে আসছে। এটা জরুরি যে এই কুকুরগউলো আমাদের কথা শুনুক; আমরা প্রাচীনকালের মানুষের অসুস্থতার কথা বলছি না। আমাদের আত্মা  অন্তর্নিহিত প্রয়োজনের বাইরে অন্য প্রয়োজনের কারণে ভোগে। আমরা দুর্নীতিতে ভুগছি , যুক্তির দুর্নীতিতে ভুগছি।


যৌক্তিক ইউরোপ অবিরামভাবে দুটি অভিধার মাঝের আত্মাকে হাতুড়ি পিটিয়ে  ভেঙে দেয়। ইউরোপ তা চাড় দিয়ে খোলে আর বন্ধ করে। গলা টিপে দম বন্ধ করার এই প্রক্রিয়া  যথেষ্ট বেশি হয়ে  গেছে; অনেক দিন ধরে আমরা ঘাড়ে চাপানো জোতের চাপে ভুগছি। মানুষের আত্মা তার মনের চেয়ে বড়, জীবনের রূপান্তরগুলো বহুগুণ। আপনার মতো, আমরাও অগ্রগতিকে ঘৃণা করি: আসুন এবং আমাদের বাড়িগুলি ভেঙে চুরমার করে দিন!

 যদিও আমাদের লেখকরা এখনও লিখে চলেছে, আমাদের সাংবাদিকরা বুকনি ঝাড়ছে, আমাদের সমালোচকরা ঠোনা মেরে চলে যায়, আমাদের রাজনীতিবিদরা জমাট বসে থাকা এবং আমাদের বিচারক গুমখুনকারীরা তাদের অপরাধের ষড়যন্ত্র শান্তিতে করে , আমরা জানি জীবন আসলে কী। আমাদের লেখক, চিন্তাবিদ, ডাক্তার এবং হিজিবিজিকারীরা জানেন কীভাবে জীবনকে এলোমেলো করতে হয়। যদিও এই সমস্ত শাস্ত্রকাররা আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, অভ্যাসে হোক বা বাধ্যবাধকতায় , আধ্যাত্মিক দুর্বলতা বা সারসংক্ষেপ উপলব্ধি করতে ব্যর্থতার কারণে,  এই স্রোতহীন ঘোলাজলে, এই বাঁক ভূমিতে, যেখানে মানুষের মহান সম্মানিত আত্মা অবিরামভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আমরা সর্বোত্তম চিন্তাকে কাজে লাগিয়েছি। এবার আসুন। এই কীটগুলো থেকে আমাদের রক্ষা করুন। আমাদের জন্য নতুন বাসস্হান গড়ে তুলুন ।


[ ১৯৯৩ সালে স্টিফেন ব্যাচেলর দ্বারা অনুবাদিত ইংরেজির বাংলায়ন ]


No comments:

Post a Comment